আজাদ এর পর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হলো না, আজাদ শুনতে গিয়ে একাত্তরের আজাদকে যেভাবে অনুভব করতে পেরেছিলাম, বাচ্চু কমান্ডারের দৃষ্টিতে উড়তে থাকা লাল সবুজের পতাকা ছাড়িয়ে সুদূর অতীতের তাঁর অবাধ্য ক্ষুদে গ্রেনেড টিটোকে নিয়ে হাহাকারটা বেড়িয়ে আসা, যা আজো ভীষণ টাটকা, টিটোকে শুনতে শুনতে সেই দিনের দৃশ্যপট’টা সেলুলয়েড রিলে যেন চোখের সামনে স্পষ্ট ভেসে আসে ।
Amit Goswami দা, বাচ্চু কমান্ডারের হাহাকারটা শব্দের বুননে তুলে আনার জন্যে অশেষ ধন্যবাদ । তবে, নষ্টালজিয়া শুনতে শুনতে যখন খেয়াল হলো শেষ- তখন মনে হলো, আনমনে গায়ক যেন চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছিলো, আনমনে ফেলে আসা অতীত একটু একটু করে উঁকি দিচ্ছে, নিকট দূরেই বসে গীতিকার আঁচ করার চেষ্টা ব্রত গায়কের আনমনে কি চলছে তা জানতে, এই যখন দৃশ্যপট ঠিক ঐ মূহুর্তেই দরজায় #আজম_বাবু ভাইয়ের আগমন! অবধারিত গায়কের স্মৃতিচারণ তাৎক্ষনিক শিঁকে, আর গীতিকারের গানের খাতা ঝোলায় … কি আপা Shawan Mahmud, ঠিক কিনা বলো?
Milton Hasnat, ভাইজান, আশি-নব্বই দশকের সমসাময়িক প্রেম বিষাদ আর অবসকিওরকে পুনরায় এক সুতায় বাঁধার দায়িত্বটা চাইলে আপনি নিতে পারেন, “দুঃখ তোমার যত” এরপর আরো কিছু গান টিপু ভাইয়ার গলায় গাইয়ে নিন, কাগজ কলম নিয়ে ব্যস্ততার মধ্য থেকে একটু সময় বের করে নিতে পারলে, আমরা শ্রোতারা ভীষণ কৃতজ্ঞ থাকবো ।
Obscure Vol. 2 – 1988 – আঁধার ঘেরা / কাল সারারাত / খোদা তোমায় / তুমি ছিলে কাল রাতে / গোধূলি বিদায়
স্বপ্নচারিণী – ১৯৯০ – সেই তুমি / স্বপ্নগুলো / স্বপ্নচারিণী / ভালো লাগে আমার / সারারাত জেগেছি একা / তোমাকেই চাই / চোখে চোখে কথা /
ফেরাতে তোমায় – ২০০১ – মনে পরে / সেই তোমাকে / ফেরাতে তোমায় /
Obscure Unplugged – ২০০৬ (পুরনো গানের unplugged version)
অপেক্ষায় থেকো – ২০০৭ – অপেক্ষায় থেকো / চিহ্ন / কেমন আছো / শেষ বিকেলের আলো / তোমার আমার মন / তোমার পিছু ডাকা /
ইচ্ছের ডাকাডাকি – ২০০৯ – আড়ি / এইবার শেষ হোক / এতটা রাত / ইচ্ছের ডাকাডাকি /
ফেরা – ২০১৩ – যাবো চলে দূরে / বৃষ্টি / জীবন / মাঝি / সংশয় / অচেনা মানুষ / তোমায় নিয়ে
অবস্কিওর ও বাংলাদেশ – ২০১৪ – স্বাধীনতার বীজমন্ত্র / আবোল তাবোল / আজাদ / মতিঝিল / পুষ্পধূলি / ইশ্ / যদি কখনও
Mushfique Karim – at Obscure’s Facebook page –
এদেশে ভালো গান হয়না, আবর্জনা শুনতে শুনতে সবাই আসলে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন । আমি নিজে কতদিন সিডি কিনিনা তা মনে করতে পারিনা । পছন্দের তালিকায় অনেক ব্যান্ড, তার ভেতর অবস্কিওর একটা । তাও শোনা হয়নি অনেকদিন । হঠাৎ করেই নতুন অ্যালবামটা কেনা হোলো, শুনলাম । কোনটা বাদ দেব, শুনছি ই । টোটাল অ্যালবাম যাকে বলে । কোন গান ফেলে দিতে পারছি না তবে বেশী ভালো লাগা ইশ্ / মতিঝিল / পুষ্পধূলি / যদি কখনও / আবোল তাবোল । দেশের গান দিয়ে আপনারা ফাটিয়ে ফেলেছেন তাই কিছুই বলার নেই । বাকী থাকলো বন্ধু, সেটাও ফেলতে পারছিনা তবে আগের গুলোর তুলনায় মনে হয়েছে লেখনি আরও ভালো হতে পারতো । কলকাতার কবি বেশী ভালো লিখেছেন যদিও ওপারের ওরা বরাবরই ভালো লেখেন । আজাদ আসাধারন । এদেশে ভালো গান হয়না কথাটা ঠিক নয়, আপনারা তার প্রমান । অনেক ভালো থাকুন আপনারা সবাই ।
Shahjalal Khan – at Obscure’s Facebook page –
আজই অবস্কিওরের এ্যালবামটা কিনলাম। আজাদ – অসাধারণ ! ইস- এই গানটা শুনে কেন যেন নস্টালজিয়াতে ভুগলাম ! সেই কবে গানের ক্যাসেট/ সিডি কিনেছিলাম ! আসলে গত এক দশকে “রিমিক্স” নামক বস্তুর আগমণের পরে গানের জগত থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলাম। এইসব “আধুনিক” জিনিস আমার মত পুরাতনবাদীদের বিকর্ষণ করে বলাই বাহুল্য। বরং বার বার শোনা ব্যান্ডের গানগুলোই ছিল অবলম্বন। অবস্কিওরকে ধন্যবাদ- আবার অনেকদিন পরে গানের জগতে টেনে আনার জন্য।
অবস্কিওরের সাথে পরিচয়ের মেল বন্ধনটা “ছাইড়া গেলাম মাটির পৃথীবী’ গানের মাধ্যমে। এর পরে যতই অবস্কিওর শুনেছি ততই অবাক হয়েছি। এ গানগুলো কেন আগে শুনিনি, এই ভেবে কেবল আফসোসই হয়েছে।
পারতপক্ষে কিছু বাছাই করা শিল্পী ছাড়া কারও লাইভ অনুষ্ঠান দেখিনা। কারন মুল গানের সাথে লাইভের গানের মিল খুজে পাওয়া যায়না। যাদের লাইভ গানের অনুষ্ঠান দেখি মুলত তারা সবাই ব্যান্ডশিল্পী। এরই মাঝে শাহেদ ভাইয়ের উপস্থাপনায় একটি অনুষ্ঠানে যখন জানতে পেলাম টিপু ভাই প্রখ্যাত সুরকার শহীদ আলতাফ মাহমুদের জামাতা, একটু নড়েচড়ে বসলাম। কারন, আগে থেকে টিপু ভাইকে জানতাম অবস্কিওরের ভোকাল হিসেবে। সে হিসেবে তাঁর প্রতি একটা ভালোবাসা ছিলই। কিন্তু এই অজানা তথ্যটা জানার পর এবার শ্রদ্ধামিশ্রিত ভালোবাসাটা অনুভব করলাম নিজের মধ্যে তাঁর জন্য। শহীদ আলতাফ মাহমুদ এমনই ব্যাক্তিত্ব যার নাম শুনলেই অবচেতন মনে শ্রদ্ধায় মস্তক অবনত হয়ে যায়। আর যাঁর সাথে তাঁর আত্মীয়তা আছে তাকে শ্রদ্ধা আর ভালো না বেসে কি পারা যায়!
এরই মধ্যে ফেসবুকে Shawan আপুকে খুজে পাই। “অবস্কিওর ও বাংলাদেশ” অ্যালবামটা কিনতে গিয়ে আপুকে ইনবক্সে অনেক জালিয়েছি। সৌভাগ্যবশত তাঁর লিষ্টে জায়গা পাই। টিভির রিমোর্ট টিপতে টিপতে একটা চ্যানেলে অবস্কিওরকে লাইভ পারফরমেন্সে পেয়ে যাই। আমি পুরাই তৃপ্ত বলা যায়। কারন অটোটিউন শিল্পিদের লাইভের সাথে যে পার্থক্য থাকে জাত শিল্পীদের, সেটাই পেলাম।
এবার আসি অবস্কিওরের নতুন অ্যালবামের কথায়। সাবজেক্টভিত্তিক গান হয়তো অনেক হয়েছে। কিন্তু “আজাদ” নামে অবস্কিওরের করা গানটার বিশেষত্ব এবং এর আবেগের মত্রাটা একটু ভিন্ন। কারন এর আগে এই রকম নির্দিষ্ট করে কোন অকুতোভয় শহীদকে এভাবে গানের মাধ্যমে তুলে আনা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। গানটার কয়টা লাইন আমি বলছি,
“জ্বলছে আগুন বুকে নিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ
ফিরেছিস যারা বীরের বেশে তোরাইতো আজাদ।
…………………………
পারতেই হবে সইতে মাগো যতদিক যন্ত্রনা
কিছুতেই আমি জানতে দেবনা মুক্তির আস্তানা
আঙ্গুলগুলো অবশ ভীষন একটিও নেই নখ
হয়তো আজই টর্চার সেলে তুলেই নেবে নখ।”
শোনার পর অনুভুতিটা একটু ভিন্যরকমভাবেই ধরা দেয় আমার কাছে।
অ্যালবামের প্রথম গানটা “স্বধীনতার বীজমন্ত্র”, যাতে বেশ কয়েকজন শহীদ বুদ্ধিজীবির কথা উল্লেখ রয়েছে।
“এমন কোন বর্গীর জাত জন্মেনি এই ধরায়
বশ করবে পরাধীনতায় তোমায় কিংবা আমায়”
একটা গানে এতটা সুন্দর করে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের ভুমিকা আর ডেডিকেশন তুলে আনা যায়, সেটা এই গান শুনলেই অনুভব করা যায়। আমি গানটা শুনে সত্যিই অভিভুত। একজন শ্রোতা হিসেবে প্রিয় একটা ব্যান্ডের কাছে এত সুন্দর লিরিকের গান পাওয়াটা সত্যি অসাধারন একটি অনুভুতি।
নিপীড়িত(বৈশ্বিক এবং স্বদেশী) মানুষের জন্য আমাদের দেশের খুব কম ব্যান্ডেরই গান গাওয়া হয়েছে। এদিক থেকে অবস্কিওর তাঁদের “ফিলিস্তিন” গানের মাধ্যমে নিজেদের কমিটমেন্টের(সামাজিক দায়বদ্ধতা) প্রতিফলন দেখাল।
“মরছো তুমি মরছি আমি লড়ছি তবু রাত্রিদিন
আমার বাড়ি বাংলাদেশে তোমার বাড়ি ফিলিস্তিন”
বিখ্যাত গীতিকার আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ও শহীদ সুরকার আলতাফ মাহমুদের সুর করা “একুশে ফেব্রুয়ারি”, যে গান আমাদের ভাষা ও শহীদ দিবসের সমার্থক হয়ে আছে সেটিকে নতুন রুপে আমাদের সামনে নিয়ে আসা তাও পুরো গানটা, বিশাল সাহসের কাজই বলা যায়। কারন এই রকম কিংবদন্তিতুল্য ব্যাক্তিদের করা কিংবদন্তি গান নতুনভাবে করার অনেক রিস্ক থাকে। গানের মুল সুর থেকে বিচ্যুত হবারও একটা সম্ভাবনা থাকে। শ্রোতারা গানটাকে কিভাবে নেয় সেটারও একটা ভয় থাকে। আমি একজন শ্রোতা হিসেবে অবস্কিওরকে একটা স্যালুটই দেব। তাঁদের সাহস দেখানোর জন্যই কেবল নয়, আমার দৃষ্টিতে তাঁরা সেটা সাফল্যের সাথে করে দেখিয়েছে। অন্তরের গভীর থেকেই একটা রেড স্যালুট নতুন করে নিজেদের আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনার জন্য।
‘৮৬ সালে যাত্রা শুরু করা একটা ব্যান্ড যাদের সদস্যরা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের মেধা আর মননের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। আমার মত, যে তাঁদের ব্যান্ডের বয়সের সমান, একজন আনাড়ি কিন্তু মিউজিক লাভারের এভাবে লেখাটা একটা ধৃষ্ঠতাই বলা যায়। একজন অবস্কিওর প্রেমী হিসেবে নিজের অনুভুতির কথাগুলো লিখলাম, এবং অবস্কিউরকে জানালাম। এটাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই আশাকরি দেখবে অবস্কিওরের বড় ভাইয়েরা।
Obscure BD — with Shawan Mahmud.
বাবু আহমেদ’s Facebook Status
## ” স্বাধীন হলো বাংলা, তবু মায়ের চোখে জল
কোথায় হারাল আজাদ তোরা কেউ তো এসে বল
জ্বলছে আগুন বুকে নিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ
ফিরেছিস যারা বীরের বেশে তোরাই তো আজাদ ।। ”
একটা গান এর ৪টা লাইন। এই ৪টা লাইন পড়লেই বোঝা যায় কি পরিমাণ আগুন, হারানোর দুঃখ অথবা পাওয়ার সুখ জড়িয়ে আছে গানটায়। “আজাদ” নামের এই গানটা শুনতে শুনতে হঠাৎ করেই মনে হয় শরীরের মধ্যে কোন একটা কিছু ঘটে গ্যাছে। বহুদিন পর… অনেকদিন পর ৭১ নিয়ে এমন কোন গান শুনলাম কোন ব্যান্ড এর গানে। কেমন একটা সম্মোহিত হয়ে থাকতে হয় গানটা শোনার সময়। অসাধারণ কম্পোজিশন, গানের কথা, গায়কী সবকিছু মিলিয়ে বেশ অনেকটাক্ষণ শরীরে গরম রক্তের চলাফেরা অনুভব করা যায়। আজাদ ও তার মায়ের এই কাল্পনিক কথোপকথন, বুকের মধ্যে ঝড় তোলে, হাহাকার ওঠে। অসাধারণ।
## “এমন কোন বর্গীর জাত জন্মেনি এই ধরায়
বশ করবে পরাধীনতায় তোমায় কিংবা আমায়
চেতনায় আজো সদা জাগ্রত সূর্য সন্তানেরা
ইতিহাস দেখো ঠায় দাড়িয়ে মুক্তির গানে ঘেরা”
“স্বাধীনতার বীজমন্ত্র” গানের নাম। এই গানটার মধ্যে একটা গনসঙ্গীত ভাব খুজে পাওয়া যাবে। পুরো গানটার মধ্যে উদ্দীপক কিছু একটা আছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে এই গান মনে করিয়ে দেবে আমাদের পুর্বপুরুষ কারা ছিলেন, আমাদের শরীরে কাদের রক্ত বইছে, বুঝিয়ে দেবে কেন “বাঙ্গালী” এই জাতিটা আর দশটা জাতি থেকে আলাদা। গানটি স্মরণ করিয়ে দেবে, যেই মাটিতে এই পুর্বপুরুষরা জন্মেছিলেন, এই মাটির জন্য জীবন দিয়েছিলেন তাদের উত্তরপুরুষরা কোনভাবেই সেই মাটির অপমান হতে দেবেন না। আর একদম শেষে গিটারের তারে “একুশের গান” এর সুরটা আরো অসাধারণ লেগেছে।
## “মরছো তুমি মরছি আমি, লড়ছি তবু রাত্রিদিন
আমার বাড়ি বাংলাদেশে, তোমার বাড়ি ফিলিস্থিন,
লাশে লাশে বাড়ছে দেনা, রক্তে রক্তে অনেক ঋণ
শিশুর কসম মায়ের কসম লাশের কসম রাত্রিদিন
তুমি আমি করছি লড়াই বাংলা আসাম ফিলিস্থিন”
সারাবিশ্বজুড়ে নিজেদের জাতিসত্ত্বার জন্য যে লড়াই চলছে তার একটা অদ্ভুত সুন্দর রুপ ফুটে উঠেছে গানটায়। মুক্তিসংগ্রামের লড়াইয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এই গান শেষ করা হয়েছে মানুষের ভালোবাসাকে অস্ত্র বানিয়ে যুদ্ধহীন একটা পৃথিবী গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে।
## “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো, একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি” – আব্দুল গাফফার চৌধুরীর কথা, শহীদ আলতাফ মাহমুদের সুরে রচিত এই গানটি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। শহীদ সুরকার আলতাফ মাহমুদ এর মেয়ে শাওন আপার গলায় আবার নতুন করে ভালো লাগছে গানটা। সেইসাথে গিটার আর ড্রাম দিয়ে নতুন করে সাজানো গানটাকে আবার অন্যভাবে ভালো লাগবেই।
## “ইশ” আর “পুষ্পধুলি” গানদুইটা একদম আমি-তুমি তুমি আমি গান। তবে “ইশ” গানটার মধ্যে একটা পাগলামি, একটু মিষ্টি দুষ্টামির ভাব, একটা এডভেঞ্চারাস প্রেম খুজে পাইলাম। গ্যারান্টেড অনেককেই নস্টালজিক করে দেবে এই গানটা। অনেককেই নতুন করে প্রেম করানোর ইচ্ছা জাগিয়ে তুলবে।
টিপু ভাই আর শাওন আপা, পুরা এলবামটাই অসম্ভব সুন্দর কিন্তু যেই গানগুলো আমার মোবাইলের, পিসির প্লেলিস্টে রাখবো সবসময়ের জন্য শুধুমাত্র সেগুলো নিয়েই লিখলাম।
আর যারা পুরো অ্যালবামটা এখনো শোনেননি অথবা একটি গানও শোনেননি তাদের বলি শুধুমাত্র “আজাদ” আর “স্বাধীনতার বীজমন্ত্র” এই গানদুটো কালেকশনে রাখার জন্যে হলেও অ্যালবামটা পুরো শোনা উচিত। অসাধারণ লাগবে, গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।
Mohd Raju at Obscure’s facebook page –
আমি অবসকিওরের অন্ধ ভক্ত বলে কিংবা অবসকিওর কে ভালোবাসি বলে এই Comments লিখছি না ,আমি এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই সামান্য কথা গুলো বলছি ।
এই গান,এই রকম গান, আর হবে না ,যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ গান তাদের সবাই কে বিনম্র শ্রদ্ধা ও সালাম । এই সব গান শুধু অবসকিওর এর দ্বারা সম্ভব এবং এই ধরনের গান বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে এক মাত্র অবসকিওরই, শুরু থেকে আজ পযন্ত অবসকিওর ভালবাসার গান ,দেশপ্রেমের গান ও মুক্তি যুদ্ধের গান ,এদেশের সমসাময়িকতার উপর গান গুলো এমন দরদ দিয়ে আবেগ দিয়ে গায় তা সবারই জানা, তবে আমি তো শিল্পী ও না ,বাদক না, বিচারক ও না। যারা এদেশের শিল্পী, যারা বিদেশী শিল্পী তারা হয়তো অবসকিওর ও বাংলাদেশ এর গান গুলো শুনলে বলবেই ,এই গুলো গান না,গানের BOSS,এই গুলো গানের কথা নয়, এই গুলো ছেলে হারা মায়ের বুক ফাটা কান্না , আমার এই Comments জানি না কেউ দেখবে কি না, তবে আমার অনুরোধ “অবসকিওর ও বাংলাদেশ” এর পুরো সিডি খুব মনোযোগ সহকারে শুনার তাহলে বুঝবে এখানে কি আছে ,অন্য সব গানে তো আমি কেদেছি ই ,মতিঝিল গানটি শুনার পর রিতিমত আমি হতবাক হয়েছি যে কি করে সম্ভব ,কি গাইলেন, এটাতো সব বাস্তবতা নিয়ে নিরব কান্না যাকে বলে। বেশি কিছু লাগে না, এই সব দিয়ে আজ OBSCURE BOSS.
সালাম সবাইকে –
Aldnane Alam – from our facebook page
A very good and well produced album by Obscure BD… every instrumentalist did a good job… the old fans of Obscure would love the album as they have maintained their early essence in most of the tracks… on top of that bass playing in the album is really brilliant. well done Raajue Sheikh.. good tone.. good choice of notes and fluent patterns. congrats.
btw : name of the album is ‘অবস্কিওর ও বাংলাদেশ’
Abu Sayeed Ahamed – from our facebook page
মিউজিকাল ব্যান্ড অবস্কিওরের নতুন অ্যালবাম ‘অবস্কিওর ও বাংলাদেশ।’ অ্যালবামে গান আছে দশটি। অ্যালবাম এর গানগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন শ্রোতা প্রতিটি গানের সাথে মিশে যেতে পারেন। একটি গানকে আরেকটি গানের সাথে বিচ্ছিন্ন মনে হবেনা, মনে হবে এক গীতিকবিতার দশটি অংশ বা পর্ব। প্রতিটা গানে খুজে পাওয়া যাবে চলমান সময়, নিজের চাওয়া-পাওয়ার সমিকরনে প্রেম আর দ্রোহ, নিজের অস্তিত্বের সাথে মিশে থাকা দেশপ্রেম, বিশ্বের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন। সুকুমার রায় আবোল তাবোলে যে ক্ষ্যাপাকে আহ্ববান করেছিলেন সে ক্ষ্যাপাদের খুজে পাওয়া যাবে এই অ্যালবাম এর দ্রোহ আর দেশের গানে, ভালবাসা ও যাপিত জীবনের সরল গানে। এই অ্যালবাম এর প্রতিটা গানের কম্পোজিসনে বৈশিষ্ট্য হল পরিমিতি বোধ। চমৎকার গীটার ওয়ার্ক, ড্রামস এর সাথে বেজের রসায়ন এবং কীবোর্ডের অপূর্ব সংমিশ্রন ঘটেছে প্রতিটি গানে। অ্যালবাম এর অসাধারন মিক্সিং এ মিউজিক থেকে প্রযুক্তি বড় হয়ে উঠে নাই। ব্যান্ডের ভোকাল শুধু দরাজ গলায় গান নাই, গানের সাথে হৃদয়ের অনুভূতিতে মিলিয়ে মগ্ন হয়ে গেয়েছেন তা শুনলেই অনুধাবন করা যায়।
অনেক ক্রিটিক বলেন ব্যান্ডের ভালো গান হয়না, এই অ্যালবাম নিয়ে তাদের নীরবতার কারন বোধগম্য নয়। টিভি এবং প্রিন্ট মিডিয়ার নাক উচু বিনোদন পাতায়/স্লটে সস্তা অ্যালবাম ও ভীনদেশী অ্যালবাম নিয়ে বেশুমার মাতামাতি হয়। এমন চমৎকার অ্যালবাম বাজারে আসার সংবাদ নামকা ওয়াস্তে তারা প্রকাশ বা প্রচার করেন। তবে বাজারে আসার পরে কেন এসব অ্যালবাম নাক উচু মিডিয়ার কাছে প্রায় অস্পৃশ্য থেকে যায় তা গবেষণার বিষয়।
“অবস্কিওর ও বাংলাদেশ”
অবস্কিওর দুদিন আগে রিলিজ করলো তাদের নতুন এ্যালবাম – “অবস্কিওর ও বাংলাদেশ”, এই এ্যালবামটি নিয়ে কিছু কথা বলার ছিলো ।
গত দুদিন ধরে একাধারে “অবস্কিওর ও বাংলাদেশ” শুনছি, গানগুলো শোনার পর মনে হয়েছে- একজন শ্রোতা হিসেবে আমি বহুমাত্রিক অনুভূতিতে জড়িয়ে যাচ্ছি । এ্যালবামের আমার প্রিয় কয়েকটি গান নিয়ে সেই অনুভূতির কথাই জানাতে চাচ্ছি:
#আজাদ:
শহীদ আজাদ-কে নিয়ে এই গানটি যতবার শুনি, ততবার ৭১ এসে আমাকে আকড়ে ধরে, এক অচেনা ব্যাথায় বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠে, কখনো’বা শিউরে উঠি, আবার পরক্ষণেই গর্বে চোখের সামনে ভেসে উঠে আজাদের মুখখানি, আমি শ্রদ্ধায় মাথা নত করি, কি করে পেরেছিলো ওঁরা- ভেবেই বিস্মিত হই ।
আজাদ, আজাদের মা (সাফিয়া বেগম) ও বাংলাদেশ – যেন একে অন্যের সাথে কথা বলছে এই গানে, ত্রিমুখী এই কথোপকথন সরাসরি হানা দেয় বুকের ভেতর, ঢুকরে উঠে গভীরে ।
#স্বাধীনতার_বীজমন্ত্র:
“এমন কোন বর্গীর জাত জন্মেনি এই ধরায়
বশ করবে পরাধীনতায় তোমায় কিংবা আমায়
চেতনায় আজো সদা জাগ্রত সূর্য সন্তানেরা
ইতিহাস দেখো ঠায় দাড়িয়ে মুক্তির গানে ঘেরা”
গানটির প্রথম চারটি লাইনে স্বাধীনতা বিরোধীদের স্পষ্ট করে হুশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে – যে মাটিতে আলতাফ মাহমুদ, মুনীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ কায়সার, সেলিনা পারভীন, মেহেরুন্নেসা, সিরাজুদ্দিন, জহির রায়হান, যোহা স্যার আর মধু’দার মতো সূর্য সন্তানেরা জন্মেছে, সেই মাটিতে কোন বর্গীর জাতের সাধ্য নেই- আমাদের স্বাধীনতার অর্জনটুকু এতটুকু ম্লান করবে ।
শহীদ বু্দ্ধিজীবিদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে গাওয়া এই গানটি স্বাধীনতাত্তোর প্রজন্মের শক্তি, সাহস আর অঙ্গিকার- ওঁদের চেতনা লিপিবদ্ধ আছে ইতিহাসে, একাত্তরে, শেকড়ে, আমাদের শুধু ফিরে তাকাতে হবে, শেকড়ের সন্ধানেই যে আছে- অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করার দীক্ষা ।
#ফিলিস্থিন:
ফিলিস্তিনীদের উপর নির্যাতন, গণহত্যার প্রতিবাদ ও তা বন্ধের আহবান উঠে এসেছে এই গানটিতে । মু্ক্তি সংগ্রামের লড়াইয়ে শুধু ফিলিস্থিনীরা একা নয়, বাংলা, মিশর, আসাম, বেলুচ’রাও লড়ছে, লড়েছে-
“মরছো তুমি মরছি আমি, লড়ছি তবু রাত্রিদিন
আমার বাড়ি বাংলাদেশে, তোমার বাড়ি ফিলিস্থিন,
লাশে লাশে বাড়ছে দেনা, রক্তে রক্তে অনেক ঋণ
শিশুর কসম মায়ের কসম লাশের কসম রাত্রিদিন
তুমি আমি করছি লড়াই বাংলা আসাম ফিলিস্থিন”
প্রত্যয় ও প্রতিবাদের পাশাপাশি প্রত্যাশায় এই গানের শেষ চরণে তাই আবার বলা হচ্ছে-
“আমারা চাই পৃথিবী যুদ্ধহীন বাঁচার আশা
আমাদের অস্ত্র হবে মানুষের ভালবাসা”
#আবোল তাবোল
সুকুমার রায়ের আবোল-তাবোল ছড়াটির উপর সুরারোপ করার পর ছড়ার কথাগুলো তারুণ্যউদ্দিপ্ত একটি চমৎকার গানে পরিণত হয়েছে, গান জুড়ে প্রাণ আর উচ্ছাস ছড়িয়ে রয়েছে ।
গানটি যখন শুনছি- বয়সটা যেন একটু বেয়ারা ভাবেই কমে যায়, শরীর যেন মেতে উঠে সৃষ্টিছাড়া উল্লাসে, নেচে উঠে তাধিন ধিন
#মতিঝিল:
মতিঝিল অফিস পাড়ায় দিনের অধিকাংশ সময়টা কেটে যায় আমার, কেননা চাকুরীটা ঐ পাড়াতেই আমাকে করতে হয় । সন্ধ্যার লগনে, সন্ধ্যাবাতি জ্বলে উঠার ক্ষণে- বাড়ি ফেরা আমার মতো অফিস ফেরাদের নিয়েই চমৎকার এই গানটি । গানের গল্পটি সংসারী আমাকেও প্রভাবিত করে, যেন চোখ জুড়ে স্বপ্ন নিয়ে প্রিয় মানুষটিকে জানিয়ে দিতে ইচ্ছে-
“শেষ বিকেলের রৌদ্রটুকু কিনে নেবো প্রেমের দামে,
তোমার চোখে চেয়ে চেয়ে আমার যেন সন্ধ্যা নামে … ”
#ইশ্ এবং পুষ্পধূলি:
“ইশ্” এবং “পুষ্পধূলি” – সত্যি বলছি, এই দুটি গান শুনে আবার পেছনে ফিরে যেতে ইচ্ছে, বেশি না, বছর দশেক নতুন করে গদো গদো প্রেম করতে ইচ্ছে করে । প্রিয়তমাকে, ভালবাসার মানুষটিকে- কবে পাবো, আদোও পাবো কিনা – এই দূর্ভবানাময় সময়টা আবার ফিরে পেলে, গান দুটো বেশ জমিয়ে অনুভব করা যেত ।
(এ সময়ের ছেলে মেয়েরা, প্রেমে কত গভীরে গিয়ে পড়ে- জানি না, আমি যে সময়ের কথা বলছি, তেমন হলে- গান দুটি ওদের বহুদিন- অসংখ্যবার শুনতে হবে, এই দুটির গানের কথা এত পরে লেখাটা কিছুটা অন্যায় হয়ে গেল, কেননা খুব বেশি প্রিয় হয়ে গেছে এই গান দুটি)
#যদি_কখনো_এবং_বন্ধু
এই দুটি গানই বিচ্ছেদের গল্প – “যদি কখনো” গানটিতে ইস্পাতসম অভিমানের কথা, অন্যদিকে “বন্ধু” গানটি ফিরে আসার আহবান নিয়ে প্রতিক্ষার কথা বলছে ।
#একুশের_গান”:
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো, একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি” – আব্দুল গাফফার চৌধুরীর কথা, শহীদ আলতাফ মাহমুদের সুরে রচিত এই গানটির সাথে প্রতিটি বাঙ্গালী পরিচিত, হয়তো শত বছর পর আমরা কেউ থাকবো না, কিন্তু এই গানটি থেকে যাবে বাঙ্গালীর জীবনে ।
বাবা আলতাফ মাহমুদ এই অমর সংগীতে সুর করেছিলেন, সেই অমর সংগীতে কন্ঠ দিলেন তাঁরইএকমাত্র কন্যা শাওন মাহমুদ, আমার প্রিয় শাওন আপা । বাবার প্রতি অপরিমেয় ভালবাসা আর গভীর শ্রদ্ধা নিয়ে মেয়ের কন্ঠ যখন বেঁজে উঠে – তখন তা ঐশ্বরিক কিছু হয় । শাওন আপা, তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ, তুমি না গাইলে হয়তো – সম্পূর্ণ গানটি শোনাই হতো না, আমি জানতাম না, আমার দেশের পথে পথে অসম্ভব সন্দুর নামের “অলকনন্দা” ফুলটি ফোটে ।
আমি উঁচু দরের কোন শ্রোতা নই, যে কিনা তাল-লয়,সুর খুব বোঝে, কিন্তু এই এ্যালবামের প্রায় সবগুলো গানই আমাকে অনুরিত করেছে, যা খুবই ব্যক্তিগত এবং নিজের স্বল্প শব্দ জ্ঞান নিয়েই তা ব্যক্ত করার চেষ্টা করলাম মাত্র, অন্য শ্রোতার ক্ষেত্রে তা ভিন্ন হতে পারে, গানগুলো নিয়ে তাদের ব্যক্ত অনুভূতি আরো সমৃদ্ধ হতে পারে, কিন্তু একথা খুব জোড় দিয়ে বলতে পারি- সফট ও মেলোডিয়াস গান যারা পছন্দ করেন, তাদের গানগুলো ভাল লাগবে ।
লিখতে বসেছিলাম এ্যালবামের কয়েকটি প্রিয় গান নিয়ে, কিন্তু লিখতে গিয়ে সবগুলো গান নিয়েই লিখে ফেললাম
টিভি, রেডিও আর as a member of “Club Obscure” হিসেবে Obscure এর last album এর 2/3 টা গান শুনতে পেরেছি album বের হওয়ার আগেই ৷ তবে পুরো CD টা পেলাম গতকাল ৷ সকাল থেকে এই পযন্ত পুরো 10 টা গান শুনেছি কতবার বলতে পারবোনা ৷ তবে একটা কথা গানগুলো শোনার পর বলতে চাই, এই একটা album পুরো একটা যুদ্ধ জয় করার ক্ষমতা রাখে ৷ শুভ কামনা রইল “অবসকিওর ও বাংলাদেশ” এর জন্য ৷
Mahmud Hasan – Text sent at Obscure’s facebook page about the song “Azad”
টিপু ভাই, আসলে শুধু ধন্যবাদ দিলে কমই হয়ে যাবে এই গানটার জন্য। আর ধন্যবাদের সঙ্গে ‘অসংখ্য’ ‘অজস্র’ ধরণের বিশেষণ যুক্ত করেও আসলে ঠিক প্রকাশ করতে পারব না ভাল লাগা টুকু।
কী বলব বলুন, এমনই এক হতভাগ্য দেশে আমরা বাস করছি যে, এখানে বীরশ্রেষ্ঠদের সম্মানটুকুও দেয়া হয় না, সেখানে নাম না জানা হাজারও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কথা কে বলবে? কে তাঁদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দিবে? একাত্তরে জীবনের পরোয়া না করে ঢাকায় একের পর এক সফল গেরিলা অপারেশন চালানো ক্র্যাক প্লাটুনের কথাই বা কয়জন জানে নতুন প্রজন্মের? গেরিলা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নাসির উদ্দিন ইউসুফ কিছুটা তুলে ধরেছেন এই বীর সেনানীদের কথা, হুমায়ূন আহমেদ ‘আগুনের পরশমণি’ দিয়ে তুলে এনেছিলেন কিছুটা, আনিসুল হক ‘মা’ উপন্যাসে তুলে এনেছেন কিছুটা, এবার আপনারা এই গানটির মাধ্যমে তুলে ধরলেন আরও কিছুটা। আপনাদের এই ঋণ শোধ হবার নয়।
আমরা আসলে খুব স্বার্থপর, আপনাদের এই অবদানের যোগ্য সম্মান আমরা দিতে পারব না কোনদিনই, বরং পাইরেসি করে আপনাদের মেধাস্বত্ত থেকেও বঞ্চিত করব আমরা, তবে ইতিহাস স্বার্থপর নয়, ইতিহাস আপনাদের স্থান দেবে তার পাতায়। বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের ইতিহাসে খুব অল্প গানই আছে আসলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বা আদর্শ নিয়ে করা, আপনাদের এই গানটি নতুন মাত্রা যোগ করল সেই অল্প কিছু গানে। অবসিকিউর এর একজন ভক্ত হিসেবে আর কিছু দিতে পারছি না, শুধু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভাল থাকুন আপনারা, ভাল থাকুক আজাদেরা।
K.i. Taj – Posted to Club Obscure
ফেরা অ্যালবামটি ছিল টক অব দ্যা মিডিয়া; ব্যাপক আকারের প্রচারণায় অবসকিওর এবং ফেরা- দুটি শব্দ বাতাসে ভারী হয়ে আছে এখনো। প্রথম গান অচেনা মানুষ, কনসার্টের জন্য দারুণ উপযোগী। মঞ্চায়ন করলেই দুলতে দুলতে গা গরম হয়ে যাবে শ্রোতাদের। অপেক্ষায় থেকো অ্যালবামের তোমার আমার মন, ইচ্ছের ডাকাডাকি অ্যালবামের দেবো না বা এতোটা রাত গানের রেশ পাওয়া যেতে পারে এই অচেনা মানুষে। জীবন গানটি দার্শনিকতায় পুরু। এরপর তৃতীয়টি হল আড়ি খ্যাত রাজীবের যাব চলে দূরে, ক্লাসিক ঘরানার আকুস্টিক সমৃদ্ধ একটি গান। পরের গান মাঝি, অসাধারণ এক সংযোজন। কনসার্টে এই গানটির জুড়ি নেই, করতেই হবে; দর্শক মাতানো আসামের ফোক গান। টিপুর ফোক প্রীতির পরিষ্কার ছাপ এই গানটি। হে ফাগুন কিংবা অসংখ্যবার, আগের দুই অ্যালবামের গানদ্বয়ের ধারাবাহিকতা হয়তো মাঝি গান, তবে মান এবং শৈলীতে অনেক এগিয়ে। এরপর আসে তোমায় নিয়ে, ঠাণ্ডা ধাঁচের মারাত্মক সুন্দর একটি গান। মন পবনের নৌকো, তুমি নেই- এগুলোর মিশ্রণ বলা যায় এই গানটিকে। তবে ড্রামিং এবং গীটারের অনবদ্য মিশেলে গানটি হয়ে উঠেছে তরুণ তরুণীর বর্তমান মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। ষষ্ঠ গান বৃষ্টি, অবসকিওর এর নতুন পরিচায়ক। রক জনারে এই গানটি শুনে অনেকে রকস্ট্রাটা কিংবা হালের মেটাল ব্যান্ড ভেবে ভুল করতে পারে। কনসার্টে গানটি চলনসই। অভিমান গানটি শান্তনুর গলায়, টিপুর গলার ক্লোন হিসেবে অনেকেই ধরে নিয়েছে। বেশ মায়া নিয়ে গানটি করা, বিরহী মনের জন্য চমৎকার উপযোগী। অনেকদিনের তুমি ৮ নম্বরে জায়গা পেয়েছে। বাফেলো সোলজার কিংবা এই ধরণের গানের জনারে গানটি করা। সংশয় গানটির কথা ওজনে অনেক ভারী। সুরারোপও বেশ নতুন মনে হয়। কানের জন্য প্রশান্তি বলা যায়। লুকিয়ে যায় চাঁদ, টিপিক্যাল অবসকিওর। আগের অ্যালবামের খেলার ছলে গানটির মিউজিকের প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় এটিতে। ফেরা আসার পরে বোঝা গেল, চিকন বাঁশরী কণ্ঠের টিপুর রেখে যাওয়া জায়গার হাল (অবসকিওর ভোকালে) হয়তো টানবে রাজীবের ভরাট গলা, আর ব্যাকআপ রাব্বানী তো থাকছেই। জয়তু অবসকিওর।।
সারমর্মঃ
একজন তরুণ কেন ফেরা শুনবে?-
অচেনা মানুষ, তোমায় নিয়ে, বৃষ্টি, মাঝি- এই গানগুলোর জন্য
পূর্ণ বয়স্ক গুরুগম্ভীর মানুষ কেন ফেরা শুনবে?-
তাদের জন্য- জীবন, অভিমান, সংশয়, লুকিয়ে যায় চাঁদ, যাব চলে দূরে।।
এস. এম. রাশেদ রনী posted on Facebook
কিছু কিছু গান কখনো রঙিন নেশায় বিলীন হবে না, তারে সবাই মনে রাখবে চিরদিন, টিপু ভাই, এমনি কিছু গানের স্রষ্টা আপনি … আপনার গানেই প্রায় তিন দশক আগে নিয়তির নিঠুর বিধান নিয়ে যে অভিমানের কথা জেনেছিলাম, সে অভিমান হয়তো আমৃত্যুই একজন শিল্পীর থেকে যায়, কেন জানি মনে হয় সেই অভিমানের পাশাপাশি কিছু পরিতৃপ্তিও আজ অবস্থান করে- আজ আপনি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেন, উপলব্ধী করবেন, কেননা ঐ পরিতৃপ্তিটুকুই শ্রোতাদের দেয়া ভালবাসা, আমাদের ভালবাসা প্রিয় শিল্পীর জন্য । আর একটা কথা, রস জ্বাল করলে যেমন সময়ে তা আরো গাঢ় হয়, মিষ্ট হয়, ঠিক তেমনি “মাঝররাতে” গানটা কালের স্রোতে আপনার কন্ঠে আরো গাঢ় হয়ে বসেছে, আরো ভরাট আর মিষ্ট লাগে … তখনকার রেকর্ডিং আর এই টিভির পার্ফরমেন্সটা পর পর শুনলাম, বলতে পারেন এতক্ষণ কাঁচা পাঁকা রসের স্বাদ নিলাম একাগ্রচিত্তে …. ( এলোমেলো অনেক কিছু লিখে ফেললাম, কেন- ঠিক জানি না)
গুঞ্জন রহমান posted to Obscure BD
“ফেরা” শুনলাম পুরোটা। কানে হেডফোন লাগিয়ে। ভেবে রেখেছিলাম প্রতিটা গানই একটু একটু করে শুনে গানগুলো কেমন হলো – বোঝার চেষ্টা করবো, পরে ঈদের ছুটিতে মনযোগ দিয়ে পুরো অ্যালবামটা বারবার করে শুনবো। … ভাবনা থাকলো ভাবনার মতো, গান চলছে গানের মতো। এই এলবাম একটানা ননস্টপ বাজানোর অ্যালবাম, পুরোটা একসাথে শোনার অ্যালবাম। কোনো কথা হবে না … এক কথায় দারুণ একটা প্যাকেজ।
পুরনো ব্যান্ডগুলোর মধ্যে মনে হয় অবস্কিওর-এর লিড ভোকাল’ই সবচেয়ে সুরেলা, সাউন্ড কন্ডিশনে আছেন। টিপু ভাই পুরোদস্তুর সুরের মানুষ, শুধু নিজে সুরে গান করেন তাই নয়, অন্যকেও সুরে গাইতে বাধ্য করেন (ড্রিমডেস্কের কর্ণধার বলে কথা!) – তার প্রত্যক্ষ ছাপ আছে পুরো অ্যালবামজুড়ে। সেই সঙ্গে অসাধারণ উপস্থিতি রাজিব-এর, কী কণ্ঠে, কী গিটারে – দুর্দান্ত! অন্য সদস্যদেরও সরব উপস্থিতি।
আর লিরিকের কথা কী বলবো। কিংবদন্তী আলতাফ মাহমুদ-এর কন্যার লেখনী আছে এই অ্যালবামে – এ তো নিয়মিতই অনুভব করা যায়। বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীত বহুদিন পর একজন নারী গীতিকার পেল – এটা আসলেই বাড়তি পাওনা। নিয়মিত, খুব নিয়মিত তাঁর লিরিক পেতে চাই – একজন গীতিকার হিসেবে জানাচ্ছি জোর দাবী!
জয় হোক বাংলা গানের
জয় হোক বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের
জয় হোক অবস্কিওর-এর
শুভ শ্রবণ!
Happy listening!!
১৯৮৬ সালে জন্ম নেয়া প্রায় ২৭ বছর অতিক্রম করা ব্যান্ড ‘অবসকিউর’ এর নতুন এ্যালবাম ‘ফেরা’ বেরিয়েছে। যদিও মাঝখানে অনেক গুলো দিন তারা ইনএকটিভ ছিলেন, দলনেতা টিপু ভাই ছাড়া আর কেউই পুরনো নেই বোধহয়। খুলনার টিপু ভাই তার বাল্যবন্ধু মানাম ভাইর অনুপ্রেরণায় ঢাকায় এসে ‘চাইম’-এ যোগ দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি ইংরেজি গান গাইতেন। পরবর্তীতে বাংলা গান করার তাগিদে খুলনায় গিয়ে নিজেই তৈরী করেছিলেন আজকের ‘অবসকিউর’।
আমার প্রজন্মের খুব কম মানুষই বোধহয় #অবসকিউরের সাথে পরিচিত। তবে তাদের বেশকিছু বিখ্যাত গান নিশ্চয়ই তাদের কানে শোনা, যেমন ‘মাঝরাতে চাঁদ যদি’, ‘ছাইড়া গেলাম মাটির’, ‘নিঝুম রাতের আঁধারে’। শেষোক্ত দুটি আমি এখনো নিয়মিত গাড়িতে শুনি। অবসকিউরের লাইভ পারফরম্যান্স না দেখার কারণে তাদের সম্পর্কে আমার মুল্যায়ন ছিল, অসাধারণ সুরেলা মেলোডি ভয়েস সম্পন্ন, মেলোডিয়াস সুর সম্পন্ন, মিডিওকার কথার, মিডিওকার ইন্সট্রুমেন্টালিস্ট ব্যান্ড।
সিডি কিনে শুনেছি ‘ফেরা’, খুব বেশি এক্সপেক্টেশান ছিল না। তবে সত্যি বলতে আমি এক্সপেক্টেশান থেকে বেশিই পেয়েছি। সুন্দর এ্যালবাম, এই অন্য ধারার মিউজিকের সময়ে এসেও সেই ৯০ দশক আর বর্তমানের ফ্লেভারের এক মেলবন্ধন আমি খুঁজে পেয়েছি। লিরিকালি আগের চেয়ে অনেক আগানো, সেই আগের মতই সুরেলা সুরের উপস্থিতি, টিপু ভাইর অসম্ভব মিষ্টি গলা, বেশ কিছু গানে যেমনঃ অচেনা মানুষে #বেসের সুন্দর কাজ ভালো লেগেছে। ‘মাঝি’ গানে আবহমান বাংলাকে ধরার চেষ্টা প্রশংসনীয়। আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে ‘লুকিয়ে যায় চাঁদ’ ও ‘সংশয়’।
তবে, একটু সমালোচনার জায়গা থেকে যায়।
একটি ব্যান্ড হিসেবে মেলোডির প্রাধান্যটা বেশি মনে হয়েছে আমার কাছে, প্রেমের লুতুপুতু ভাবটা প্রকট। সামাজিক বিভিন্ন অনাচার, সমকাল এবং টোটাল ‘রক’ এর প্রাধান্য আমার কাছে নেই বলেই মনে হয়েছে, সিনিয়র ব্যান্ড হিসেবে আমি এটা আশা করেছিলাম।
সব সমালোচনা বাদ দিয়ে শুধু মাত্র এই পাইরেসির যুগেও এ্যালবাম বের করার সাহস দেখানোর জন্য ‘অবসকিউর’ প্রশংসার দাবি রাখে। কবে শেষ আমাদের চিরচেনা ব্যান্ড গু্লো নিয়মিত এ্যালবাম করেছে, আমি ভুলে গেছি আসলেই। ‘অবসকিউর’ সেদিক থেকে বিশাল এক স্বস্তির জায়গা।
‘অবসকিউর’ কে এখন চাই লাইভে, খুব বেশি করে। চাই আরো নিয়মিত। আমরা শো করার জন্য খুব লিমিটেড কিছু ব্যান্ডের বাইরে আর চয়েজ পাই না এখন, লাইভ শো’র ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা সবাইই শঙ্কিত। আশা করবো, ‘অবসকিউর’ একটি খুব ভাল চয়েজ হবে আমাদের জন্য। হাজার হোক, একটি ব্যান্ডের মূল পরিচয় তার লাইভ অনুষ্ঠানেই.. … — with Sayed Hasan Tipu.
ফেরা: #ব্যবচ্ছেদ – Duke John
‘আজকাল ভালো গান হয় না,’ বলে আক্ষেপ করেন অনেকে। অবসকিওর ব্যান্ডের ‘ফেরা’ অ্যালবামটি শুনলে এই ভুল ধারণা দূর হতে বাধ্য।
সহজ কথার সুন্দর গানের জন্য অবসকিওরের জনপ্রিয়তা আজকের নয়। প্রায় তিরিশ বছর ধরে রুচিশীল শ্রোতার জন্য গান করে যাচ্ছেন ব্যান্ডের সদস্যরা। এই ধারাবাহিকতায় তাদের সর্বশেষ অ্যালবাম— ফেরা।
অ্যালবামে গান রয়েছে দশটি। প্রথম গান ‘অচেনা মানুষ’ আপনার মুড ভালো করে দেবে। লিরিক যদিও স্যাড-রোমান্টিক, কিন্তু সুর ও সঙ্গীত রক ’এন’ রোল টাইপের। এর উলটোটাও রয়েছে। যেমন: ‘তোমায় নিয়ে’ পজিটিভ লাভ-সং হলেও এর সুর বিষাদ মাখা। তবে উপস্থাপনার নৈপুণ্যে কথা এবং সুরের এই বৈপরীত্য বেমানান লাগে না মোটেই।
জীবন শুধু কি হয় সাদা কিছু কালো থাকতে হয়/কালো সাদা মিলেমিশে একটা পুরো জীবন হয়— অসাধারণ এই পঙক্তির গানটির শিরোনাম ‘জীবন’। ‘যাবো চলে দূরে’ অ্যাগনাইজড গান। ‘মাঝি’ ফোক। অসমিয়া ভাষার এই গান ‘আমার হাড় কালা করলাম রে’ গানটির কথা মনে করিয়ে দিল। দুই ভাষার দূরত্ব তেমন বেশি নয় বলেই কি তাদের শেকড়ে এত সাদৃশ্য? রক নাম্বার ‘বৃষ্টি’-তে পাওয়া গেল ব্রডওয়ের ছোঁয়া। ‘অভিমান’-এ হৃদয় উজাড় করা আবেগ।
অ্যালবামের অন্য গানগুলো হলো— ‘অনেকদিনের তুমি’, ‘সংশয়’ এবং ‘লুকিয়ে যায় চাঁদ’।
ফেরার বেশির ভাগ গান কোলাবরেশন করে লেখা। লিখেছেন শাওন মাহমুদ, টিপু, মোস্তফা মাহমুদ, শান্তনু, রাজু, টি আই অন্তর ও রাজিব।
আলাদা করে বলতে হয় অনবদ্য মিক্সিংয়ের কথা। প্রচ্ছদে করপোরেট লুকে ব্যান্ড-সদস্যদের উপস্থিতি দেখে মনে হলো, কস্টিউম ডিজাইনও ভালো গুরুত্ব পেয়েছে।
ফেরা একটি অগ্নিবীণা প্রকাশনা।
গুঞ্জন রহমান
এ বছর বিজয়-দিবস আসছে অন্যরকম আবহ নিয়ে, কারণ ৪৩ বছর পর এবার সত্যি সত্যিই বিজয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে। পাগলাঘণ্টি বাজতে শুরু করেছে পরাজিত দালাল-যুদ্ধাপরাধী-গণহত্যাকারী-
আমরা খুব ঘটা করে বিজয় দিবস পালন করতে পছন্দ করি, কিন্তু বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের খুব একটা ধার ধারিনা। বিজয় দিবস এখানে সরকারী ছুটির দিন হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস নয়। অথচ আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসই আমাদের সবচেয়ে বড় কষ্টের দিন, সবচেয়ে বেশি চেতনায় ভাস্বর হয়ে ওঠার দিন। আমাদের প্রধানতম জাতীয় দিবস। ৫২’র ভাষা সৈনিকেরা সংখ্যায় কতজন ছিলেন? তাঁদের অবদানকে এতটুকুও খাটো না করেই প্রশ্ন রাখা যায়, পাঁচ কিংবা সাত কিংবা নয়-দশজন ভাষা শহীদের মিছিলরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হওয়া যদি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে প্রায় অর্ধশত বুদ্ধিজীবী যাঁরা কিনা বিদ্যাবুদ্ধি-জ্ঞানগরিমা ও দেশপ্রেমে এই জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান ছিলেন, তাঁদেরকে রীতিমতো তালিকা করে ঘৃণ্য পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হলো যে দিনটিতে – সেটি কেন এত সাদামাটাভাবে স্মরণ করা হবে? কেন আমাদের আগামী প্রজন্ম এই দিনটিতে বুকভরে শ্বাস নিয়ে অনুভব করবে না জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের দীর্ঘশ্বাসে আজও কতটা ভারী হয়ে আছে বাংলার আকাশ-বাতাস? কেন তারা এই জাতি গঠনে মহীরূহের মতোন একেকজন শহীদ বুদ্ধিজীবীর অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে নিজেদেরও তাঁদের প্রেরণায় গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ হবে না?
খানিকক্ষণ আগে অবসকিওর-এর “স্বাধীনতার বীজমন্ত্র” শুনলাম দেশটিভি’তে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রথম প্রহরে। অবসকিওর আমার প্রিয় ব্যান্ড, খুব প্রিয় ব্যান্ড সন্দেহ নেই – তথাপি আমি খুব নির্মোহ থেকে বলতে পারি, যে গান শুনে রক্ত টগবগ করে ফুটে ওঠে, যে গান শুনে নিজের ভেতর উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়, অনুভূত হয় আমিও কিছু করে ফেলি – এমন তাগিদ, তেমনিই একটা গান সৃষ্টি হয়েছে এই গান। এটা আসলে যে এখনো শোনেনি, তাকে লিখে বোঝানোর নয়।
কিন্তু লিখতে হবে। বলতে হবে। চিৎকার করে বলতে হবে। এটা চুপচাপ উপভোগের সময় নয়। অনেক হয়েছে ভোগ-উপভোগ, আর নয়। এবার গর্জে ওঠার পালা। ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সময়ের সঙ্গে চলেছি আমরা। সেই সময়ের দাবী মেটাতে না পারলে আগামী প্রজন্ম ক্ষমা করবে না আমাদের। … আমার ভাবতে গর্ব হচ্ছে, আমার প্রিয় ব্যান্ড অবসকিওর সেই দাবী পূরণের পথে সোচ্চার হয়েছে। এর চেয়ে ভালোভাবে এটা আর হতে পারতো না। কিছুতেই না।
অবসকিওর-এর এই গান – এই “স্বাধীনতার বীজমন্ত্র”কে মন্ত্রের মতোই জপে যেতে হবে। রক্ত-আগুনে যে বীজমন্ত্র বুনে দিয়ে গেছেন আমাদের উত্তরসূরী আলতাফ মাহমুদ-জহির রায়হান-সিরাজুল ইসলাম-মুনীর চৌধুরী’রা, সে বীজ কখনো অঙ্কুরিত না হয়ে পারে না। আমাদের বীজঘুম ভাঙছে… বর্গীরা সাবধান! মনে রেখো শ্বাপদের দল – “এমন কোনো বর্গীর জাত জন্মেনি এই ধরায়…” — with Shawan Mahmud and 16 others.
হঠাৎ করে পরিচিত হলাম এক প্রিয় শিল্পীর সাথে
গানটা প্রথম কবে শুনেছিলাম মনে নেই । ৯০-এর দশকের শুরুর দিকে হয়তো, প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র, থ্রি কিনবা ফোর’এ পড়ি হয়তো … অতটুকু বয়সে নিজে গান পছন্দ করে শুনতাম, তা কিন্তু না; বড় ভাই তখন এইট নাইনের ছাত্র, অডিও ক্যাসেট কেনা, গান শোনা – ওটা তখন ওরই কাজ, ক্যাসেট প্লেয়ারে ভলিউম বেড়ে যেত তখন- যখন ওর সমবয়সী কোয়ার্টারের আপুরা (আপু’টা আমার ক্ষেত্রে) বাসার সামনের রাস্তায় বিকেলে হাঁটতো, বড় ভাইজান আমার খুব পার্ট নিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে হাই ভলিউমে গান শুনতো … এবং আমিও শুনতাম । ভাই যে গানগুলো শুনতো, সেই গানগুলো একসময় আমারও প্রিয় হয়ে গেল, আমার বয়স বেড়েছে, বড় হয়েছি, হাই স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি থেকে আজ কর্মজীবনে যখন বাঁধা পড়ে গেছি সেই সময়কার গানগুলো এখনো আমার সাথে রয়ে গেছে, এক একটি গান – সময়ের সাথে সাথে আরো প্রিয় হয়েছে, বড় ভাইয়ের ভাল লাগার গানগুলো একসময় নিজের প্রিয় গান হয়ে গেছে, নিজের ভাল লাগার হয়ে গেছে ।
আমার নিজের একটা বড় ত্রুটি আছে -তাহলো শিল্পীর নাম মনে রাখতে পারি না, গান প্রিয় হলেও না, এমনকি অনেক শিল্পীকে হয়তো দেখলেও চিনবো না (যারা মিডিয়াতে বেশি আলোচিত, তাদের অবশ্য চিনি) ।
তেমনি একটি প্রিয় গানের কথা বলছি, একজন শিল্পীর কথা বলছি আজ, এবং আজকেই তা বলতে চাচ্ছি । যে গানটি আমার কৈশোর থেকে আজ অবদি অনেক বেশি ভাল লাগার, এবং যথারীতি ব্যান্ডের নাম জানলেও এই কিছুদিন আগ পর্যন্ত শিল্পীর নামটি ভুলে বসে ছিলাম, যেহেতু গানটি ৯০ দশকের শুরুতে শুনেছিলাম, ক্যাসেটের কাভারে শিল্পীর চেহারা দেখতে কেমন ছিলো সেটিও মনে থাকার প্রশ্নই আসে না । গত ঈদের (কুরবানি) অনুষ্ঠানে একটি চ্যানেলে উনি পারফর্ম করছিলেন,ঐ গানটি যখন গাইছিলেন – তা শুনেই শোবার ঘর থেকে বসার ঘরে এসে বসলাম । প্রিয় একটি গানের শিল্পীকে প্রায় দুই দশক পড়ে চিনলাম, বলতে পারেন নতুন করে চিনলাম, কারণ আগে কেমন দেখেছিলাম- সেই স্মৃতি আমার ছিল না । গান শুনতে শুনতে হঠাৎ মনে হলে- উনাকে এই অনুষ্ঠান দেখার আগেও কোথায় যেন দেখেছি, কিন্তু কোথায় – মনে করতে পারছিলাম না তখন ।
এর একদিন কি দুদিন পড়ে ফেসবুকের টাইম লাইনে দেখলাম এক ফেসবুক বন্ধু তার প্রোফাইল পিক চেঞ্জ করেছে, এবং ছবিতে আমি যাকে দেখছি, সেটি ঈদের অনুষ্ঠানে পারর্ফম করা সেই প্রিয় শিল্পীর, যিনি কিনা আমার ফেসবুকের একজন বন্ধু, যার গান আমি ভালবাসি, কিন্তু যাকে আমি ঠিক চিনি না…. হ্যাঁ, উনি Obscure এর সেই Tipu ভাই, যার আহম্মক এক ভক্ত আমি (কারণ আমি তাকে চিনতাম না) । এই ঘটনাটা তাকে বলবো, বলবো করে আর বলা হয়নি… আজ বললাম, কারণ তার একজন ভক্তের কিম্ভুতকিমাকার অভিজ্ঞতার কথাটুকু তাঁর জন্মদিনের শুভেচ্ছা হিসেবে দিতেই এই বলে ফেলা । সরি টিপু ভাই, চিনতে পারিনি… আর কৈশোরে সেই এ্যালবামের কাভারে নিশ্চয়ই আপনার কাঁচাপাঁকা দাড়ি ছিল না, তাই নাহ
এবং জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা টিপু ভাই আর শুভ জন্মদিন
টিপু ভাইকে চিনতাম না, আর তাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিয়েছিলাম Shawan আপার spouse হিসেবে, আপা- আপনাকেও ধন্যবাদ । আর একটা কথা আপা, এই সুযোগে বলে ফেলি, আপনাকেও মনে হতো- কোথাও যেন দেখেছি, কিন্তু…. আমি আপনাকে সত্যিকার অর্থে চিনেছি টিপু ভাইকে চেনার অনেক পর, হয়তো কিছুদিন আগে…. সরি আপা, আপনার এই ছোট ভাই, ঘরকুনো কম জানা এক ছেলে, সরি ।
আর আমার সেই খুব প্রিয় গানটি হলো –
“মাঝরাতে চাঁদ যদি আলো না বিলায়, ভেবে নেবো আজ তুমি চাঁদ দেখনি”
আর একটি মজার ব্যাপার হলো- এই একটি মাত্র গান আমার গিন্নি আমার ভাঙ্গা বেসুরে গলায় শুনতে ভালবাসে, হঠাৎ কোন মাঝরাতে বলে উঠে – “গাও তো ঐ গানটা”, মাঝে কোন লাইনে উল্টোপাল্টা গেয়ে ফেলতে- অবাক হয়ে তাকায়- “তুমি এই গানের লাইন ভুলো কি করে !!!”… ভুলে যাওয়াটা এখানে অপরাধের পর্যায়, তো টিপু ভাই, গানটি আপনি গাইলে কি হবে, এটা এখন আমাদের হয়ে গেছে, বেসুরে হলেও আমাদের ….
আমাদের দুজনের পক্ষ থেকে আরো এক বার জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে ।