আবোল তাবোল – সুকুমার রায়
আয়রে ভোলা খেয়াল-খোলা স্বপনদোলা নাচিয়ে আয়
আয়রে পাগল আবোল তাবোল মত্ত মাদল বাজিয়ে আয়
আয় যেখানে ক্ষ্যাপার গানে নাইকো মানে নাইকো সুর
আয়রে যেথায় উধাও হাওয়ায় মন ভেসে যায় কোন সুদূর
আয় ক্ষ্যাপা-মন ঘুচিয়ে বাঁধন জাগিয়ে নাচন তাধিন্ ধিন্
আয় বেয়াড়া সৃষ্টিছাড়া নিয়মহারা হিসাবহীন
আজগুবি চাল বেঠিক বেতাল মাতবি মাতাল রঙ্গেতে –
আয়রে তবে ভুলের ভবে অসম্ভবের ছন্দেতে
একুশে ফেব্রুয়ারী – কথা : আব্দুল গাফফার চৌধুরী
সুর : শহীদ আলতাফ মাহমুদ / কণ্ঠ : শাওন মাহমুদ ও অবস্কিওর
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি
জাগো নাগিনীরা জাগো জাগো নাগিনীরা জাগো জাগো
জাগো কালবোশেখীরা শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তিলগনে তবু তোরা পার পাবি তবু তোরা পার পাবি
না, না, খুনে রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারী একুশে ফেব্রুয়ারী
সেদিনও এমনি নীল গগনের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকনন্দা যেন
এমন সময় ঝড় এলো এক ঝড় এলো খ্যাপা বুনো
সেই আঁধারে পশুদের মুখ চেনা
তাদের তরে মায়ের, বোনের, ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের বুকে দেশের দাবীকে রুখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই সারা বাংলার বুকে
ওরা এদেশের নয় দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়
ওরা বাঙ্গালীর অন্ন, বস্ত্র, শান্তি নিয়েছে কাড়ি
একুশে ফেব্রুয়ারী একুশে ফেব্রুয়ারী
আজাদ – তাঞ্জিল রহমান
পারছিনা আর সইতে মাগো আমি এ যন্ত্রনা মন চাইছে ঠিক বলে দেই মুক্তির আস্তানা
আঙ্গুলগুলো অবশ ভীষণ একটিও নেই নখ হয়তো আজই টর্চার সেলে তুলেই নেবে চোখ
স্বাধীন হলো বাংলা তবু মায়ের চোখে জল কোথায় আমার আজাদ তোরা কেউতো এসে বল
জ্বলছে আগুন বুকে নিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ ফিরেছিস যারা বীরের বেশে তোরাইতো আজাদ
পারছিনা আর সইতে মাগো বিষ কী কোথাও নাই মুক্তির খোঁজ কী করে যে দেই ওরাও আমার ভাই
তোমার মাখানো ভাতের সে স্বাদ এখনো ভুলিনি মাগো ভাতের থালা সামনে নিয়ে এখনো কি রাত জাগো
এই ছিল মোর যাদু ধনের মুখেরই শেষ বুলি খুঁজে পাইনি আজো তারে কোথাও দিয়েছে বলি
পেরিয়ে গিয়েছি কত অশ্রুতে গাথা রাত আমি সেই মা আজও বেঁচে আছি হারিয়ে গ্যাছে আজাদ
ঘুমহারা চোখে কত না রাত কাটিয়েছি তোর শোকে লাল সবুজের সাজানো দেশ তবুও এঁকেছি বুকে
কত আজাদের ঋণে গর্বিত এই মাটি তাদেরি রক্তে স্বাধীন স্বদেশে মাথা উঁচু করে হাটি
পারতেই হবে সইতে মাগো যত দিক যন্ত্রনা কিছুতেই আমি জানতে দেবনা মুক্তির আস্তানা
আঙ্গুলগুলো অবশ ভীষণ একটিও নেই নখ হয়তো আজই টর্চার সেলে তুলেই নেবে চোখ
বন্ধু – মোস্তফা মাহমুদ
বন্ধু তুই দুঃখ না সুখ রাগ না অনুরাগ
বন্ধু আজও দুঃখ কি তোর স্বপ্নে বসায় ভাগ
আয় ফিরে আয় স্মৃতির ভাঁজে আর কত নির্বাক
মন মেলাবো মনের মাঝে একটু আমায় ডাক
তোর কারনে এই বিজনে আজও বসে আছি
আয় ফিরে আয় স্বপ্নছায়ায় হৃদয়ের কাছাকাছি
বৃষ্টি এলে এখনো কি ভিজতে ভালবাসিস
শেষ বিকেলে পথ চেয়ে কি আশায় আশায় থাকিস
বুকের ভেতর আজও অবুঝ ভালবাসার দাগ
মন মেলাবো মনের মাঝে একটু আমায় ডাক
তারায় তারায় রাত্রি নামে জোছনা গায়ে মেখে
রাতের শেষে নতুন ভোরের গল্প কে লেখে
অনেক কিছুই বলার আছে আজ এটুকুই থাক
মন মেলাবো মনের মাঝে একটু আমায় ডাক
ফিলিস্তিন – আবু সায়িদ আহমেদ
মরছো তুমি মরছি আমি লড়ছি তবু রাত্রিদিন
আমার বাড়ি বাংলাদেশে তোমার বাড়ি ফিলিস্তিন
লাশে লাশে বাড়ছে দেনা রক্তে রক্তে অনেক ঋণ
দেশে দেশে চলছে লড়াই করতে বিশ্ব দানবহীন
শিশুর কসম মায়ের কসম লাশের কসম রাত্রিদিন
তুমি আমি করছি লড়াই বাংলা আসাম ফিলিস্তিন
আমার কথা আমার গান ফুল পাখী আর শিশুর মন
আমার মাটি আমার দেশ স্বাধীনতা আমার পণ
শিশুর কসম মায়ের কসম লাশের কসম রাত্রিদিন
তুমি আমি করছি লড়াই বাংলা বেলুচ ফিলিস্তিন
আমরা চাই পৃথিবী যুদ্ধহীন বাঁচার আশা
আমাদের অস্ত্র হবে মানুষের ভালবাসা
শিশুর কসম মায়ের কসম লাশের কসম রাত্রিদিন
তুমি আমি করছি লড়াই বাংলা মিশর ফিলিস্তিন
ইস্ – অমিত গোস্বামী
জীবনপথের বাঁকে আঁধার মেঘের ফাঁকে তোমাকে দেখেছি আমি রোদ্দুর
জীবন অন্ত্যমিলে একা তুমি হেঁটেছিলে হৃদয়ে উঠল বেজে সুর
সেই সুর বুকে নিয়ে পাহাড়ী রাস্তা দিয়ে হেঁটে এসে বলেছিলে – ইসস্
এত ভোরে কোথা থেকে আমাকে এনেছো ডেকে সবাই ঘুমিয়ে ছিল – ভাগ্যিস্
জড়িয়ে ধরলে বুকে বৃষ্টিপাতের মুখে কখনো ভাবি নি এই সব ভুল
হঠাৎ দুষ্টু চোখে আমার জামার বুকে গেঁথে দিলে তুমি রঙধনু ফুল
ভেজা চুলে বনলতা শেষ করে সব কথা আমাকে বললো আজ তবে যাই
কাল তবে দেখা হবে জ্যোৎস্নার উৎসবে তুমি কানু হবে আমি হব রাই
মতিঝিল – আবু সায়িদ আহমেদ
সন্ধ্যা নামে – মতিঝিলে ইট পাথরের শাপলা ফুলে
সন্ধ্যা নামে – অফিস পাড়ায় চা দোকানের ছোট্ট টুলে
শেষ বিকেলের রৌদ্রটুকু যেতে যেতে হঠাৎ থামে
কে জ্বালাবে সন্ধ্যাবাতি মনে যখন সন্ধ্যা নামে
সন্ধ্যা নামে লোকাল বাসে গায়ে গায়ে ঠাঁসাঠাসি
বাদুরঝোলা ঝুলেও তবু সামনে যেতে ভালবাসি
দাবী দাওয়ার মিছিলগুলো ফুরিয়ে যায় ডানে বামে
কে জ্বালাবে সন্ধ্যাবাতি মনে যখন সন্ধ্যা নামে
সন্ধ্যা নামে দিনের শেষে রোদের হাসি ঘাসে ঘাসে
আর কিছুনা একটা জীবন থেকো আমার আশেপাশে
শেষ বিকেলের রৌদ্রটুকু কিনে নেবো প্রেমের দামে
তোমার চোখে চেয়ে চেয়ে আমার যেন সন্ধ্যা নামে
পুষ্পধূলি – অমিত গোস্বামী
সারাটা দিন তোমার সাথে থাকি জানি আমি কোথাও তুমি নেই
রোদের কথা ভাবা আমার বারণ মেঘ দিয়েছি মেঘের কারনেই
গভীর রাতে পুধপধূলি ওড়ে আকাশ ঢাকে তোমার মুখের কালো
অন্ধ আমি জানবো না তো আর কালো ভ্রমর আর কতটা কালো
কেমন যেন তোমার শরীর জুড়ে ঘুমপাড়ানি সুন্দরটাকে ঢালো
তবু চোখে সন্ধ্যাবিষাদ কেন জানি তুমি বৃষ্টি বাসো ভালো
টানাপোড়েন এই ধরনের জুড়ে মন খারাপের হাঁটতে থাকা দিন
আমার গানের অবগাহন ফুঁড়ে সামনে তুমি ভালবাসার ঋণ
স্বাধীনতার বীজমন্ত্র – মনিরুল ইসলাম রানা
এমন কোন বর্গীর জাত জন্মেনি এই ধরায়
বশ করবে পরাধীনতায় তোমায় কিংবা আমায়
চেতনায় আজো সদা জাগ্রত সূর্য সন্তানেরা
ইতিহাস দ্যাখো ঠায় দাঁড়িয়ে মুক্তির গানে ঘেরা
মেঠোপথে আজো আলতাফ হাঁটে সুরে সুরে আর গানে
আবারো মুনির এসে দাঁড়াবেই মঞ্চের টানে টানে
থেমে নেই আজো সেলিনার সেই শিলালিপি প্রকাশনা
শহিদুল্লার সংশপ্তক ঘরে ঘরে আছে জানা
মেহেরুন্নেসা লিখেই চলেছে বুলেটের ঝড় ঠেলে
সিরাজুদ্দিন পাতায় পাতায় কতো বিষ যায় ঢেলে
যোহা স্যার এর প্রতিবাদী ঝড় ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে
চায়ের কাপে মধুদার হাসি বারে বারে ফিরে আসে
রায়হান আজো করে প্রতিবাদ stop genocide নামে
আমরা থামিনি ছুটেই চলেছি শেকড়েরই সন্ধানে